ফুটপাত দখল করে চাঁদাবাজিতে বাধা দেওয়ায় দৈনিক তৃতীয় মাত্রা পত্রিকার মোঃ সেলিম মোল্লা নামে এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৭ ঘটিকার সময় রাজধানীর পল্লবীর দুয়ারীপাড়া রূপনগর এলাকায় কাদের নামে চিহ্নিত এক চাঁদাবাজ এ হুমকি প্রদান করে।ভুক্তভোগী সাংবাদিক সেলিম মোল্লা নিজের নিরাপত্তা চেয়ে রুপনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। রুপনগর থানার জিডি নম্বর -১২৮,তারিখ-০৩/১১/২০ইং।
জানা গেছে,এলাকায় দুলাল নামে এক ফুটপাতের হকারের দোকান ভাড়া বাবদ চাঁদা দাবি করে চাঁদাবাজ কাদের। দুলাল চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাকে নানা ভাবে হুমকি দেয় কাদের। চিৎকার চেঁচামেচির এক পর্যায়ে সেখানে শতাধিক লোকজন জড়ো হয়। পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে তখন ওই রাস্তা দিয়েই বাসায় ফিরছিলেন সাংবাদিক সেলিম। ভীড় থেকে কৌতুল নিয়ে তিনি সেখানে এগিয়ে যান। তাদের তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে সাংবাদিক সেলিম নিজের পরিচয় দিয়ে কাদের দুলালের নিকট কিসের টাকা দাবি করেন সেটি জানতে চান।
তাদের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চাঁদাবাজ কাদের সেলিম মোল্লার উপর চড়াও হয়। উচ্চস্বরে সেলিমকে শাসাতে থাকে- আপনি কিসের সাংবাদিক? আপনি আমাদের কাজে নাক গলাচ্ছেন কেনো? এখানে দোকান করতে হলে আমাকে নিয়মিত নির্দিষ্ট পরিমান টাকা দিতে হবে।
তখন সেলিম তার পকেট থেকে তার ভিজিটিং কার্ড বের করে তাকে দিলে সে ভিজিটিং কার্ডটি ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলে, বাংলাদেশের সব পত্রিকা ও টিভ চ্যানেলে আমার নামে নিউজ করেন-আমি চাদাবাজ কাদের। ফুটপাতের লাইন ম্যান কাদের। শিয়াল বাড়ি, রূপনগর আবাসিক, মিল্ক ভিটা মোড়,দুয়ারিপারা, ইষ্টার্ণ হাউজিং ১৬ নং রোড, (৬) রূপনগর টিনসেটসহ সকল ফুটপাতে যেসব দোকান বসে সেখান থেকে টাকা তুলে থানার ওসি ও নেতাদেরকে আমিই টাকা পৌছে দেই। আপনি আমার কি করবেন? আমি দোকানটা তুলে দেবো, আপনার ক্ষমতা থাকলে আপনি কিছু করেন।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক সেলিম জানান, ভিজিটিং কার্ড ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তার ঔদ্ধত্য পূর্ণ আচরণে সাংবাদিক আমিও উচ্চস্বরে কথা বললে এক পর্যায়ে কাদের ও তার সহযোগীরা আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। আমাকে মারধর করার জন্য বিভিন্ন ভাবে পদক্ষেপ নেন। সেই সময় উপস্থিত জনগণ তাকে প্রতিহত করে। আমি আমার মুঠোফোন বের করে দু’একজন সাংবাদিকদের ফোন করলে তিনি আমাকে সুযোগ পেলে হত্যার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে দ্রুত চলে যান।
সেলিম আরো জানান, এই চাঁদাবাজ সুযোগ পেলে যে কোন সময় আমার বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। স্থানীয় পুলিশ প্রশানকে বিনীত অনুরোধ করছি এই চাঁদাবাজ কাদের কে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বারংবার ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযানকে তোয়াক্কা না করে রূপনগর থানা এলাকার সকল ফুটপাত ও সড়কের অলিগলিতে বাজার বসিয়ে বিপুল পরিমান অর্থ আদায় করছে এই চাঁদাবাজ কাদের। দোকান প্রতি এককালীন মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পরও কাদের সিন্ডিকেট প্রতিদিন দোকান ভেদে-যেমন: মাছ দোকান ২০০ টাকা, মুরগীর দোকান ২০০ টাকা, চটপটি দোকান ২০০ টাকা, শালসার দোকান ২০০ টাকা, টোং দোকান ১০০ টাকা, সবজির দোকান ১০০ টাকা ও ভ্যানগাড়ী থেকে ৫০ টাকা। সকল অবৈধ স্থাপনা স্থাপনে কাদের সিন্ডিকেটের হাত ছাড়া কোনো কিছু করা সম্ভব নয় রূপনগর থানাধীন এলাকায়!
এ বিষয়ে জানতে কাদের এর ব্যবহারিক মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।রূপনগর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি এবং তার ভিডিও দেখেছি । এই বিষয়ে তদন্ত চলছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে অবশ্যই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply