ফয়সাল বারী,আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:
আমতলীতে এক স্কুল ছাত্রকে বলাৎকারের মূল্য ধরা হয়েছে এক ঘা জুতা পেটা ও এক হাজার টাকা জরিমানা। বলাৎকারের নায়ক শাহজাহান মৃধার বড় ভাই প্রভাবশালী রফিক মৃধা এ মুল্য নির্ধারন করেছেন। শালিস বৈঠকের নামে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে উঠে পরে লেগেছে ওই প্রভাবশালী পরিবারটি। তাদের ভয়ে শিশুর পরিবার মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না। মামলা করলে শিশুর পরিবারকে এলাকা ছাড়া ও জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে শাহজাহান ও তার পরিবার। ঘাতক শাহজাহান ও তার পরিবারের ভয়ে শিশুর পরিবার দিশেহারা। ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলের ঘাতক শাহজাহান ও তার প্রভাবশালী পরিবারের ভয়ে মামলা করতে পারছেনা শিশুর পরিবার।
এ ঘটনার এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ঘাতক শাহজাহানের বিচার দাবী করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পূর্বচিলা গ্রামের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়–য়া এক স্কুল ছাত্র গত মঙ্গলবার বাড়ির পাশে একটি মাঠে খেলা করছিল। এ সময় একই গ্রামের কাসেম মৃধার ছেলে শাহজাহান মৃধা (৫০) বিস্কুট খাওয়ানোর কথা বলে ওই স্কুল ছাত্রকে ডেকে পাশে ধান ক্ষেতে নিয়ে যায়। ওই খানে নিয়ে মুখে গামছা ঢুকিয়ে বলাৎকার করে।
বহু কান্নাকাটি করেও রক্ষা পায়নি ঘাতকের কাছ থেকে শিশুটি। শিশুটি বাড়ি এসে এ ঘটনা তার বাবা-মাকে জানায়। ছেলের অবস্থা খারাপ দেখে তার বাবা ছেলেটিকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় নোমরহাট বাজারের পল্লী চিকিৎসক নিখিলেশের কাছে নিয়ে যান এবং চিকিৎসা করেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠে প্রভাবশালী শাহজাহান ও তার পরিবার।
এ ঘটনা ধামাপাটা দেওয়ার জন্য গত বুধবার রাতে ঘাতক শাহজাহানের বড় ভাই স্থানীয় প্রভাবশালী রফিক মৃধা তার বাড়িতে এক শালিস বৈঠক আয়োজন করেন। শিশুর বাবা অভিযোগ করেন জোর করে রফিক মৃধা ওই শালিস বৈঠকে তাকে
উপস্থিত করেছে। ওই শালিস বৈঠকে ঘাতক শাহজাহানের বড় ভাই রফিক মৃধা শাহজাহানকে দায়সারা এক হাজার টাকা জরিমানা এবং এক ঘা জুতাপেটা করে বিষয়টি মিমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্ত সালিশের এ বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না বলাৎকারের শিকার শিশুর পরিবারটি।
এদিকে ঘাতক শাহজাহানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে না পারে সেই জন্য শালিস বৈঠকের নামে প্রভাবশালী পরিবারটি গত আট দিন ধরে শিশুর পরিবারকে জিম্মি করে রেখেছে। শিশুর বাবা আরো অভিযোগ করেন শাহাজাহানের বিরুদ্ধে মামলা করলে তাকে এলাকা ছাড়া এবং মেরে ফেলারহুমকি দিচ্ছে। তাদের ভয়ে ঘটনার আট দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা করতে পারে নি শিশুর পরিবার।
শিশুর পরিবারকে তারা জিম্মি করে রেখেছেন। এ ঘটনার এলাকার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী এ ঘাটনার ঘাতক শাহাজাহানের বিচার দাবী করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ শাহজাহান ইতিপূর্বে এ ধরনের ঘৃনিত ঘটনা একাধিকবার ঘটনা ঘটিয়েছে। বলাৎকারের শিকার শিশুর বাবা কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, প্রভাবশালী শাহজাহান মৃধা মোর পোলাডারে ধান ক্ষ্যাতে নিয়া মোহে গামছা দিয়া খারাপ কাম করছে। পোলাডার অবস্থা খারাপ দেইখ্যা মুই ডাক্তার দ্যাহাইছি। হের পর অরা মোরে মামলা না করার জন্য ডর দেহায়। মুই গরীব মানু অগো ডরে মামলা হরতে পারি নাই। মামলা হরলে মোরে ওরা এলাকা ছাড়া মাইর্যা হালানোর হুমকি দেয়। তিনি আরো বলেন, শাহজাহানের বড় ভাই রফিক মৃধা দারসারা শালিস হরছে। হে মোরে ১ হাজার টাহা দিছে।
আর শাহজাহানকে একটা জোতার বারি দেছে। মুই হেই টাহা আনি নাই। মুই এইয়ার বিচার চাই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় কয়েকজন বলেন, শাহজাহান মৃধা খারাপ প্রকুতির লোক। সে ইতিপূর্বে এ ধরনের একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের ভয়ে কেই মুখ খুলতে পারছে না। শাহজাহানের বড় ভাই শালিসকারী রফিক মৃধা শালিস বৈঠকের কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এ বিষয়ে কোন আপোস নেই অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply