পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া ২৫ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে বাঙালিদের উপর বর্বর অপারেশন চালানোর নির্দেশ দেয়। ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামক ঐ পরিকল্পনা অনুযায়ী দুটি সদর দপ্তর স্থাপন করা হয়। মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীর তত্ত্বাবধানে প্রথম সদরদপ্তরটি গঠিত হয়। এখানে ৫৭তম ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার আরবাবকে শুধু ঢাকা নগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় এবং মেজর জেনারেল খাদিম রাজাকে প্রদেশের অবশিষ্টাংশে অপারেশনের দায়িত্ব দেয়া হয়। অপারেশনের সার্বিক দায়িত্বে থাকেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান। বাঙালি মুক্তিকামী ছাত্র জনতা এবং রাজনৈতিক কর্মীরা ক্যান্টনমেন্টের বাইরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি সৈন্যদের অভিযান ঠেকাতে রাস্তায় প্রতিবন্ধক সৃষ্টি করা হয়।
২৫ মার্চ রাতেই পাকিস্তানি সৈন্যরা মেশিনগান ,জীপ ও ট্রাকে করে ঢাকার রাস্তায় নেমে পড়ে। তাদের প্রথম সাঁজোয়া বহরটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে এক কিলোমিটারের মধ্যে ফার্মগেট এলাকায় ব্যরিকেডের মুখে পড়ে। তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান খান কামালের নেতৃত্বে ছাত্র-শ্রমিক- আওয়ামী লীগ নেতারা এই ব্যরিকেড তৈরি করেন। রাস্তায় সব পাশেই ফেলে রাখা হয়েছিল বিশালাকৃতির আস্ত গাছ। অকেজো পুরনো গাড়ি ও অচল রোড রোলারও ব্যরিকেডের কাজে ব্যবহার করা হয়। কয়েকশ লোক প্রায় ১৫ মিনিট ধরে অলিগলি থেকে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। তবে সেনাদের গুলি দ্রুত তাদের নিস্তব্ধ করে দেয়। সেনাবহর শহরময় ছড়িয়ে শুরু করে গণহত্যা।
ঐতিহাসিক সেই ঘটনা স্মরণে ২৫ মার্চ, রাত ৮ টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রথম নারী শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি , এমপি।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহতী আয়োজনের মধ্য মনি এবং ২৫ মার্চ ফার্মগেইটে প্রতিরোধের ব্যরিকেডের নেতৃত্বদানকারী তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, এমপি।
২৫ মার্চ কাল রাত্রিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যরিকেড উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদ নান্নুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মাননীয় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, এমপি, হাইকোর্টের মান্যবর বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র আতিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক এবং স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব:) সাজ্জাদ আলী জহির, বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মেজর (অব:) এ এস এম শামসুল আরেফিন, চিত্রনায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদ আলমগীর, গণহত্যা গবেষক এবং দীপ্ত টেলিভিশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা ফুয়াদ চৌধুরীসহ আরও অনেকে।
Leave a Reply