যৌন উদ্দীপক ও সেক্স টয় পণ্য বিক্রয় চক্রের মূলহোতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশ। আজ রোববার সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. জিসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রেজাউল আমিন হৃদয়, মীর হিসামউদ্দিন বায়েজিদ, মো. সিয়াম আহমেদ রবিন, মো. ইউনুস আলী ও আরজুল ইসলাম জিম।
এক সংবাদ সম্মেলনে আজ দুপুরে সিআইডি জানায়, গত ৭ জানুয়ারি রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও’ লেভেলের ছাত্রী আনুশকা ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যান। ময়নাতদন্তে জানা যায়, বিকৃত যৌনাচারের ফলে মারা যায় আনুশকা। বিশেষজ্ঞরাও জানান, আনুশকার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানগুলোতে এক ধরনের ফরেন বডি ব্যবহার করেছিল, যার ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আনুশকার মৃত্যুর বিষয়টি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিষয়টি সিআইডির সাইবার মনিটরিং এবং সাইবার ইনভেস্টিগেশন টিম এর নজরে আসলে এ বিষয়ে ব্যাপক অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু হয়।
সিআইডি জানায়, কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে বিক্রয় নিষিদ্ধ সেক্স টয় ও যৌন উদ্দীপক বিভিন্ন পণ্যের ছবি এবং ভিডিওসহ বিক্রয়ের বিজ্ঞাপন দিচ্ছে।
কয়েকটি ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজকে সনাক্ত করতে সক্ষম হন তারা। পরস্পর যোগসাজশে সংঘবদ্ধ চক্রটি বিদেশ থেকে বৈধ পণ্য আমদানীর আড়ালে আমদানী নিষিদ্ধ পণ্য বাংলাদেশে আমদানী করছে এবং পরবর্তীতে এই সব পণ্য বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উচ্চমূল্যে এক শ্রেণির ক্রেতাদের কাছে বিক্রয় করছে। আর লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে তারা মোবাইল ব্যাংকিংকে বেছে নেয়।
বিস্তারিত অনুসন্ধানের পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সাইবার ইনভেস্টিগেশন এর একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডিএমপির পল্লবী থানা এলাকার অলিভিয়া ক্যাফে এন্ড রেস্টুরেন্ট থেকে এ সংঘবদ্ধ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ নিষিদ্ধ পণ্য পাওয়া যায়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা।
গ্রেপ্তারকৃত জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি জানতে পারে, এ চক্রের মূল হোতা মো. মেহেদী হাসান ভূইয়া। সে ২০১০ সাল থেকে ডেলিভারী ম্যান হিসেবে চাকরি করতো। ২০১৩ সালে চাকরি ছেড়ে নিজে ব্যবসা শুরু করে। সে অনলাইনে পণ্য ক্রয়ের জন্য কয়েকবার ভারত ও চীনেও গেছে।
২০১৭ সাল থেকে পরবর্তীতে নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলে ব্যাপক পরিসরে আমদানি নিষিদ্ধ সেক্স টয় ও যৌন উদ্দীপক ওষুধ বিক্রয় শুরু করে সে। এই সকল পণ্য শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে কৌশলে বৈধ পণ্যের আড়ালে বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো। তারা এ কাজে বিভিন্ন সিএন্ডএফ এজেন্টরা সহযোগিতা করতেন বলে জানতে পারে দলটি।
পরবর্তীতে বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিতো চক্রটি। আর পণ্যগুলো বিভিন্ন ডিলারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হতো। অনেক ক্ষেত্রে পণ্যে ডেলিভারির জন্য ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নেওয়া হলেও তার ডেলিভারি করা হতো না।
Leave a Reply