১৬টি চিত্রা হরিণ বিক্রি করেছে মিরপুরের জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। প্রত্যেকটির বয়স দেড় বছরের বেশি। এগুলোর প্রতিটি ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। রোববার (২৭ জুন) জাতীয় চিড়িয়াখানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সম্প্রতি হরিণ ও নীল ময়ুর বিক্রির বিজ্ঞাপন দেয়া হয়। তার ভিত্তিতে ৩০ জন আগ্রহী হরিণ কিনতে লিখিতভাবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। তাদের মধ্যে মোট ছয়জন ১৬টি পুরুষ ও নারী হরিণ কিনেছেন। ছয়টি কিনেছেন ঢাকা নবানগঞ্জের ব্যবসায়ী ওয়ালিউল্লা ভূঁইয়া। নবাবগঞ্জ সদরের আবদুল ওয়াদুল ভূঁইয়া নামে এক ব্যবসায়ীর দুটি হরিণ কিনতে টাকা জমা দিয়েছেন। এছাড়া আরও কয়েকজন কেনার জন্য মৌখিকভাবে নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় চিড়িয়াখানার পরিচালক ডা. মো. আব্দুল লতীফ জাগো নিউজকে বলেন, বিক্রয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এ পর্যন্ত চিত্রা হরিণ কিনতে ৩০টি আবেদন জমা হয়েছে। তার মধ্যে থেকে ছয়জনের কাছে ৭০ হাজার টাকা দরে ১৬টি হরিণ বিক্রি করা হয়েছে। আরও প্রায় ১২০টির মতো বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে। আগ্রহীরা নির্ধারিত অর্থ জমা দিয়ে দিলে তাদের হাতে হরিণ তুলে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা হরিণ ও নীল ময়ূর বিক্রি করতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও বর্তমানে ময়ূর বিক্রি করা হচ্ছে না। মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত ডিম দেয় বলে তা বিক্রি করা হচ্ছে না। আগামী ১৫ জুলাই থেকে নীল ময়ূর বিক্রি করা হবে বলে জানান তিনি।
চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে চার মাস ধরে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। এতে স্বাভাবিক বন্য পরিবেশে বেড়ে উঠেছে সব প্রাণী। চিড়িয়াখানার প্রাণিকুলের প্রজনন ক্ষমতাও বেড়েছে। ফলে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত প্রাণী বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে প্রথমে হরিণ ও নীল ময়ূর বিক্রি করা হবে।
জানা গেছে, কয়েক মাস আগে মা হরিণগুলো অনেক বাচ্চা জন্ম দিয়েছে। এখন বেশ বড় হয়েছে তারা। সব মিলিয়ে চিড়িয়াখানার তিনটি শেডে বর্তমানে ৩১৮টি হরিণ রয়েছে। শেডগুলো অসমতল হওয়ায় ধারণক্ষমতা কম। চিড়িয়াখানার এসব শেডে সর্বসাকুল্যে ৩০০ হরিণের অবাধ বিচরণের সুযোগ রয়েছে। অথচ এখন হরিণের সংখ্যা ৩১৮টি। এ জন্য কিছু হরিণ দ্রুত বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৭৮টি নীল ময়ূর রয়েছে। এসব ময়ূর বিক্রি করা হবে। নীল ময়ূরের জন্য পর্যাপ্ত স্থান থাকলেও বিরল প্রজাতির পাখি হওয়ায় এগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে এই পাখির বিচরণ বাড়বে। মানুষ নীল ময়ূর সম্পর্কে জানতে পারবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব খাতে আয়ও বাড়বে বলে মনে করে কর্তৃপক্ষ।
Leave a Reply