মাধ্যমিকের ৯ম-১০ শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ের ষোড়শ অধ্যায়ের বাংলাদেশের সামাজিক সমস্যা ও এর প্রতিকার নামক পাঠের সূচনা পৃষ্ঠায় দেখা যায় মাহবুবা পারভীনের ছবি। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট সন্ত্রাস বিরোধী জনসভায় নৃশংস বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার শিকার হয়ে ১৭৯৮টি স্প্লিন্টার দেহের মধ্যে নিয়ে বেঁচে আছেন সাভারের মাহবুবা পারভীন। ভয়াবহ সেই গ্রেনেড হামলায় আইভি রহমানের পাশে যে তিনজন মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিলেন তাদেরই একজন সাভারের মাহবুবা পারভীন।
মাহবুবা পারভীনকে মৃত ভেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছিল। ঘটনার প্রায় ৬ ঘন্টা পর স্বেচ্ছাসেবকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা আশিষ কুমার মজুমদার সেখানে লাশ সনাক্ত করতে গেলে মাহবুবা পারভীনকে জীবিত দেখতে পান। পরে ৭২ ঘন্টা পর তার জ্ঞান ফিরে এলে দেশে তার চিকিৎসা ভাল না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তাকে কলকাতায় পিয়ারলেস হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতাল থেকে তাকে জানানো হয়েছিল শরীরে রয়েছে ১৮০০ স্প্লিন্টার। এরমধ্যে মাথার দুটি স্প্লিন্টার তাকে অনবরত যন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যেই সে পাগলের মতো হয়ে যান। তার শারীরিক অবস্থা ভাল না। এরইমাঝে তার পা থেকে দুটি স্প্লিন্টার অপারেশন করে বের করা হয়।
২১ আগস্ট এলেই এর ভয়াবহ স্মৃতি মনে পড়লে এখনও আঁতকে উঠেন,কান্নায় চোখ মুখ ভিজে যায় তার। ওই দৃশ্য মনে করলে ভয়ে তার দেহ অবশ হয়ে যায় তাই এ ব্যাপারে তিনি আর স্মৃতি চারন করতে চান না।বর্তমানে ঢাকা জেলা (উত্তর) আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মাহবুবা পারভীন মৃত্যুর আগে এ জঘন্য হামলাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখে যেতে চান। তিনি আক্ষেপ করে বলেন,সাভারের নেতা কর্মীদের বাড়ী গাড়ীর অভাব না থাকলেও আহত মাহবুবা পারভীনকে অন্যের সহায়তায় রিক্সা কিংবা বাসে যাতায়াত করতে হয়।
২০১৬ সলের ১৫ নভেম্বর তার স্বামী ফ্লাইট সার্জেন্ট (অব.) এম এ মাসুদ স্ট্রোক করে মারা যায়। দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আসিফ পারভেজ একটি বেসরকারী ব্যাংকে চাকুরী করেন,ছোট ছেলে রোওশাদ যোবায়ের আর্কিট্যাকচার।বর্তমানে তার ছোট ছেলে ও ছেলের বউ উচ্চশিক্ষার জন্য ডেনমার্কে অবস্থান করছেন।
Leave a Reply